মুন্সীগঞ্জের ছেলে মাহফুজ জাপানে গড়ে তুলছেন নিরাপদ তথ্য প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ।

প্রকাশিত: 31 Oct 2025

লিংক: https://bangla.bdnews24.com/kidz/793f5ca485ba

বর্তমানে মাহফুজ (বাঁয়ে) টোকিও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

বর্তমানে মাহফুজ (বাঁয়ে) টোকিও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

বাংলাদেশের ছেলে মাহফুজুল ইসলাম, জন্ম মুন্সীগঞ্জে। সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে তিনি ২০০২ সালে জাপান সরকারের মনবুশো বৃত্তি পেয়ে ওই দেশে পড়তে যান। তারপর কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য প্রকৌশলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পান (২০১৪)।

তার গবেষণার যাত্রা শুরু হয়েছিল ওইটা ন্যাশনাল কলেজ অব টেকনোলজি থেকে, যেখানে তিনি কম্পিউটার ও নিয়ন্ত্রণ প্রকৌশলে পড়াশোনা করেন।

বর্তমানে মাহফুজ টোকিও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বাংলা, ইংরেজি ও জাপানি- এই তিন ভাষাতেই দক্ষ। জাপানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিম্নশক্তি ইলেকট্রনিক সার্কিট, কম্পিউটিং-ইন-মেমোরি এবং নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করছেন।

মাহফুজ ২০১৩ সালে ‘জাপান সোসাইটি ফর দ্য প্রমোশন অব সায়েন্স’ (জেএসপিএস) ফেলো ছিলেন। তিনি টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং পরে কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বর্তমানে তিনি টোকিও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজস্ব ল্যাব, সেখানে তিনি সার্কিট ও সিস্টেম ডিজাইন গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার গবেষণার মূল লক্ষ্য কম শক্তি ব্যয়ে, দ্রুত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক সার্কিট তৈরি করা, যা ভবিষ্যতের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও নিরাপদ যোগাযোগ প্রযুক্তির ভিত্তি গড়ে তুলবে বলে আশা করছেন তিনি।

তিনি একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘আইইইই বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড, অ্যাকাডেমিক রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘এএসপি-ডিএসি বেস্ট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড’। তার গবেষণা পরিচিত ট্রু র‍্যান্ডম নাম্বার জেনারেটর প্রযুক্তির জন্য। এটি বিশ্বব্যাপী তথ্য নিরাপত্তা ও এনক্রিপশন প্রযুক্তিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে বিশ্বাস তার।

এ সাক্ষাৎকারে তিনি তার গবেষণা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এতে প্রযুক্তি সংক্রান্ত কিছু শব্দের ব্যাখ্যা সহজবোধ্য ভাষায় সংযুক্ত করা হয়েছে।

কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা-সংস্কৃতির মূলশক্তি কী বলে মনে করেন?

কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো ‘ফ্রিডম ইন অ্যাকাডেমিক থিংকিং’। এখানে গবেষকদের উপর বাজার বা শিল্পখাতের চাপ খুব কম। টোকিওর মতো বড় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত যা ‘দ্রুত বিক্রি করা যায় বা কাজে লাগানো যায়’ সেই দিকেই বেশি মনোযোগ দেয়। কিন্তু কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মৌলিক ও দীর্ঘমেয়াদি গবেষণাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে শিক্ষার্থীদের শেখানো হয় ‘প্রয়োগে যেতে চাইলে আগে ভিত্তিটা আয়ত্ত করো’। এই চিন্তাধারাই নোবেল ঐতিহ্যের মূল। কৌতূহল থেকেই এখানে গবেষণার শুরু হয়। নতুন কিছু জানার আনন্দ তাদের চালিকাশক্তি। এমন স্বাধীন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি তরুণ গবেষকদের জন্য বিরল অনুপ্রেরণা।

আপনার গবেষণার মূল লক্ষ্য কী?