লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1BBQHkuuJ5/

image.png

আমাগো পাড়ার পোলাপাইনের বহুতদিনের প্ল্যান আছিল - হেলিকপ্টারে চড়ার। মনের শখ আছিল আর কি! পোলাপাইনদের নিয়া ঢাকার আকাশে ঘুরুমু, এক চক্কর মেরে আসুমু বুড়িগঙ্গার উপরে! কিন্তু ভাইজান, হেলিকপ্টার নিয়া এখন তো মহা মুসিবত। সকল দেশের প্রধানমন্ত্রীরা হেলিকপ্টার কিইন্যা ছাদের মাথায় দাঁড় করাইয়া রাখতাছে, কখন পালাইতে হইবো কে জানে!

তয় একটা জিনিস কি জানেন ভাইজান, এইডা নতুন ফ্যাশন না। আগের লিডাররাও হেলিকপ্টার দিয়া চপ্পট পালাইছিলো! কি মনে করতে পারতাছেন না? দাড়ান একটু মনে কইরা দিই-

প্রথমেই মনে পড়লো ২০০১ সনে আর্জেন্টিনার দে লা রুয়া এর কথা। সেই দেশে দাঙ্গা লাগলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ছাদ থেইকা হেলিকপ্টারে চইরা পলাইয়া গ্যাছে। তারপরে মনে পড়লো ১৯৭৫ ভিয়েতনাম যুদ্ধের শেষের ঘটনা। সাইগন পড়ার সময় দক্ষিণ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট নুয়েন ভান থিউ দেশ ছাইড়া উড়াল। আমেরিকানরাও এক্কেবারে চকবাজারের ইফতার রাশের মত হেলিকপ্টার দিয়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় উদ্ধার খেলাইছে।

ভাইজান, সেই ইতিহাসের দিনগুলার ট্রেন্ডখানা আজকালকালও চালু আছে। আমাগো বাংলাদেশে আগস্ট ২০২৪ এ শেখ হাসিনা ১৫ বছরের শাসনের পরে ছাত্র আন্দোলনের চাপে হেলিকপ্টারে চইরা ভারতে টুপুস। এরপরে পড়শুদিন নেপালের কেপি শর্মা অলি দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে সেনার হেলিকপ্টারে ঝুলে পালাইছে। মন্ত্রী ভাইদের তো দেখছে মানুষ হেলিকপ্টারের নিচে ঝুলতাছে, একদম নবাবপুরের লাইটের তারের মত!

এখন দোকানদাররে যদি বলি, “ভাই, হেলিকপ্টার চাই।” প্রথমেই উনি জিগাইবো—“আপনে কি প্রধানমন্ত্রী নাকি?” কারণ হেলিকপ্টার এখন তো ভাই: এক্সপ্রেস পালানোর বাহন, ছাদের উপরে স্ট্যান্ডবাই, দাঙ্গার টাইমে এমার্জেন্সি এক্সিট। আমাগো ছেলেরে নিয়া চক্কর মারার প্ল্যান তো এখন পুরা লস। সবাই ভাববো আমি বুঝি কোন দেশের বস!

হেলিকপ্টার এখন আর শখের জিনিস না—এইডা অইয়া গেছে পলিটিক্যাল সারভাইভাল কিট। যার হেলিকপ্টার নাই তার রাজনীতি করা মানে মিষ্টি খেতে গিয়া টাকা না নেওয়া—এক্কেবারে ফালতু! এইটাই এখন নিউ নরমাল, বুঝলেন ভাইজান?

তো আমার হেলিকপ্টারে চড়ার প্ল্যান আপাতত ক্যানসেল। যতদিন না এই ট্রেন্ড ফিনিশ হয়, ততদিন বাস-রিকশা-সিএনজির রাইডেই চলতে হইবো। আর যদি কখনো প্রধানমন্ত্রী হই, প্রথম কাজ হেলিকপ্টার কেনা—তবে সেইডা চকবাজারের ফুচকা ট্যুরের জন্য, পলানোর জন্য না! তবে কে জানে, কিনলেই হয়তো মাথায় পালানোর চিন্তা ঘুরে বেড়াইবো। এইডাও এক রকমের ভাইরাস, ভাইজান! হাহাহা!

পুনশ্চ: যদি কারো হেলিকপ্টার দোকানের ঠিকানা জানা থাকে, আমারে একটু জানাইয়্যা দিয়েন। কিন্তু দোকানদাররে বলিয়েন, “ভাই, আমি প্রধানমন্ত্রী না, শুধু ফ্রি রাইড নেবো।” হাহাহা!

আইজ শুক্রবার ২৮শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকাইয়া কবি মশিউর হেলিকপ্টারে চড়তে না পাইরা মনের দুক্ষে এই কথাখান লিইখ্যা গেল। ইতিহাসে লেইখ্যা রাইখেন। চড়ত না পারলে কি করুম, ছবিখানা এআই দিয়্যা আঁকাইয়া লইলাম।