প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫

লিংক: https://www.bigganchinta.com/sciencefiction/2vbj38s3ey

Ariana-er_ma.pdf

সেন্ট্রাল কমিউনিকেশন সিস্টেম এখন এই ড্রোনগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে

সেন্ট্রাল কমিউনিকেশন সিস্টেম এখন এই ড্রোনগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে

আরলিনের হলোগ্রামটি নিয়ে আরিয়ানার বাবা অনেক্ষণ বসে থাকলেন নিজ অফিসে। অনুমতি ছাড়া কারো মস্তিষ্কের হলোগ্রাম করা এখন কঠিন অপরাধ। কিন্তু আরলিনের উইল অনুযায়ী মৃত্যুর পরে তার মস্তিষ্ক ত্রিমাত্রিক স্ক্যান করে এই হলোগ্রাম তৈরি হয়েছে। তা এখন তার হাতে। কিন্তু আরলিন কেন এ কাজটি করল, তা বুঝতে পারলেন না।

মানুষের এমন অনেক স্মৃতি থাকে যা অন‍্যের না জানাই ভালো। এ কারণেই হয়তো আমরা অন‍্যের চিন্তা বুঝতে পারি না। আর মেয়েরা তো এক গভীর সাগর। সেখানে অনেক কিছুই থাকে একান্ত গোপনীয়।

তার মৃত স্ত্রীর প্রতি সম্মান জানিয়ে আরিয়ানার বাবা স্মৃতির হলোগ্রামটি নিজের অফিসের লকারেই রেখে দিলেন। পুরো এক ইয়োট্টাবাইট (১০২৪) তথ্যের এই হলোগ্রামে আরলিনের সব স্মৃতিই রয়েছে। তার ছেলেবেলা থেকে কৈশোর, একসঙ্গে কাটানো সময় থেকে শুরু করে তাদের মেয়ে আরিয়ানার জন্ম পর্যন্ত সব স্মৃতিই এখানে আছে। মানুষ কি তাহলে এক ইয়োট্টাবাইট তথ‍্যভান্ডারে রূপান্তরিত হওয়ার জন‍্যই জন্মেছে?

বলবেন তার মা একটি মিশনে দূরের কোনো গ্রহে গেছে। এমন তো হরহামেশাই হচ্ছে। হাইপারড্রাইভ দিয়ে আমরা কত দূরের গ্রহে চলে যাচ্ছি, হলোগ্রাফিক ছায়ার সঙ্গে কথা বলছি।

অফিসের সব জানালা বন্ধ এবং সেন্ট্রাল কম্পিউটার সিস্টেমের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স থেকে স্নিগ্ধ বাতাস বইছে। তবুও তার একটু বাইরের বাতাস পেতে ইচ্ছে হলো। জানালা খুলে দেখল, আকাশে উড়ছে হরেক রকমের ড্রোন। কোনোটি খাবার পৌঁছে দিচ্ছে, আবার কোনোটিতে চড়ে মানুষ যাতায়াত করছে। তার তৈরি ড্রোনগুলোকেও উড়তে দেখা যাচ্ছে। ড্রোনগুলোর ওপরে সূর্যের আলো পড়ায় ঝলমল করছে।

দুই.

আরিয়ানার চতুর্থ জন্মদিন তিনি খুব সাদামাটাভাবে পালন করলেন। নিজের কিছু সহকর্মীকে ডেকেছিলেন। তাদের মধ্যে ছিল অফিসের নতুন চিফ সাইন্টিস্ট ড. সোম। বড় হলরুমের কোনায় হালকা মিউজিক বাজছিল। সবাই গল্প করতে ব্যস্ত। ড. সোম তার পাশে এসে বললেন, ‘আর কিছুদিন পর মেয়েটি সবকিছু বুঝতে শিখবে। মায়ের অভাব কীভাবে পূরণ করবেন?’

ড. সোমের কথাটা ঠিক বুঝলেন না তিনি। তাই জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি কোনো পাত্রীর জন্য ঘটকালি করছেন?’

ড. সোম বললেন, ‘নাহ, ঠিক সেরকম নয়। আসলে আমার কাজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে। তাই ভাবছিলাম আপনার আরিয়ানার মায়ের স্মৃতি দিয়ে একটি সিস্টেম তৈরি করে দিলে কেমন হয়?’

আরিয়ানা তো গিনিপিগ নয়। ওকে নিয়ে পরীক্ষা করব কেন?

আহা, আমি সেভাবে বলিনি। মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে গল্প করবে, এতে তার মায়ের অভাব পূরণ হবে।

কিন্তু বড় হলে আরিয়ানাকে আমি কি বোঝাব?