আবির এর হাতে এই বছরের বেশ কিছু ছুটি জমা পড়ে গেছে। কোথায় যাওয়া যায়?- তা নিয়ে সে ভাবতে বসলো। বন্ধুরা সবাই কোরিয়া’র কথা বললো। একদিন ছুটির দিনে আবির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বসলো কোথায় কোথায় ভ্রমণে যাওয়া যায়, সেটি সমন্ধে বিস্তারিত জানতে। মোটামুটি সে প্লান দাড় করিয়ে ফেললে। সামনে ঈদের ছুটিতে সে তার আরেক বন্ধুর সাথে কোরিয়া যাবার জন্য এক্সপেডিয়া থেকে টিকেট কাটলো। আগোডা থেকে হোটেল বুকিং দিল। সেগুলির টাকা দেবার জন্য সে অনলাইন ব্যাংকে যেয়ে টাকা পেমেন্ট করলো। সিউলে পৌছে সে উবার এ ট্রক্সি ডেকে হোটেলে পৌছে গেল। হোটেলে পৌছে সে কাউন্টারে নাম রেজিস্ট্রেশন করে, দুই বন্ধু মিলে সিউল শহরটা দেখতে বের হল। কখন কোথায় যাবে সেটি তারা গুগল এর ম্যাপ দেখে দেখে বের করে নিচ্ছিল।

এবার দেখা যাক, আজ হতে কয়েক বছর পরে কেমন হবে ? সেই সময়ে বর্তমানের মানুষ ও সিস্টেমগুলির পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার AI এজেন্ট কাজ করবে। সেই সময়ে আবিরের এই ভ্রমণটি হবে অনেকটা এইরকম-

আবির তার নিজের একটি AI এজেন্ট থাকবে, সে তাকে কোরিয়ার সিউলে যাবার নির্দেশনা দিবে এবং কি কি দেখতে চায় তা জানাবে। তখন তার AI এজেন্টটি একটি প্লান দাঁড় করিয়ে আবিরকে জানাবে। যেহেতু তার এই AI এজেন্টটি তার পছন্দ-অপছন্দ এবং প্রোফাইল জানে, তাই আবিরের পছন্দমত কাস্টোমাইজ করে দেবে। আবির সেই প্লানটি কনফার্ম করলে, সেই এজেন্টের সিস্টেমই প্লেনের টিকেটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে টিকেট কাটবে। টিকেট কাটার অর্থ ব্যাংকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে পেমেন্টও করে দিবে। এরপরে হোটেল বুকিং এর কাজটি সারবে। সিউল এয়ারপোর্টে পৌছবার আগেই আবিরের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এজেন্ট উবার এর AI এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে গাড়িটি প্রস্তুত করে রাখবে। এমনটি হোটেলে রেজিস্ট্রেশনের কাজটি আগেভাগেই হোটেলের AI এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে কনফার্ম করবে।

এইভাবে সকল কাজগুলিই স্বয়ংক্রিয়ভাবে AI এজেন্টের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যাবে। এইভাবে শুধু মাত্র প্লেন, হোটেলই নয় - সব সিস্টেমই এক একটি এজেন্টে রূপান্তরিত হবে। এবং সেটি পিছনে (প্রযুক্তিবিদদের ভাষায় backend ) এ কাজগুলি সমাধান করবে। পরিশেষে সামগ্রিকভাবে আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করে দেবে।

AI এজেন্ট আর ভবিষ্যত নয়, এখনই তৈরি হচ্ছে

AI এজেন্টের এই ধারনাটি যদিও নতুন, কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত প্রযুক্তিগুলি এত দ্রুত তৈরি হচ্ছে যে খুব শীঘ্রই আমরা এটি দেখতে পাবো। এমন কি হতে পারে যে আপনার অফিসের কাজগুলি করে দেবার জন্য আপনি নিজেই তৈরি করে নিবেন আপনার একটি এজেন্ট।

সম্প্রতি রেপ্লিট (Replit) এমন একটি এআই এজেন্ট চালু করেছে যা শুরু থেকে সম্পূর্ণ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে সক্ষম। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শুধু কোড লেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এতে প্রকল্প পরিকল্পনা, সিস্টেম নকশা, প্রযুক্তি নির্বাচন, পরীক্ষা, স্থাপন এবং ক্রমাগত শিখনসহ আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত।

এআই এজেন্টের বৈশিষ্ট্য

  1. সমগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি (Holistic Approach): ধারণা থেকে স্থাপন পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রকল্প পরিচালনা করতে পারে।
  2. স্বয়ংক্রিয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ (Autonomous Decision-Making): প্রকল্পের কাঠামো, স্থাপত্য এবং প্রযুক্তি পছন্দ সম্পর্কে উচ্চ-স্তরের সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।
  3. প্রসঙ্গ সচেতনতা (Context-Aware): প্রকল্পের বৃহত্তর প্রসঙ্গ বুঝতে পারে, শুধু পৃথক কোড স্নিপেট নয়।
  4. প্রো-অ্যাকটিভ সমস্যা সমাধান (Proactive Problem-Solving): সম্ভাব্য সমস্যাগুলি সনাক্ত করতে এবং সমস্যাগুলি হওয়ার আগেই সমাধান প্রস্তাব করতে পারে।