সম্রাট বাবর খুব অসুস্থ সে সময় রাজ্য পরিচালনা করার জন্য এবং জনগণকে শান্ত করার জন্য তাকে মাঝেমধ্যেই জনগণের সামনে হাজির হতে হতো এবং সেই কাজটি করবার জন্য সেনাপতি কাজটি করতো। কিন্তু একটা সময় উনি যখন খুব অসুস্থ হয়ে গেল তখন তার অনুপস্থিতিতেই জনগণকে মনে সাহস যোগানোর জন্য তিনি রাজার মতন দেখতে আরেকজন নকল রাজাকে খুঁজে বের করল এবং তাকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দিতে দিয়া তো যেন জনগণকে শান্ত করা যায়।।
সে সেটি ১৪০০ বছরের সময়ের কথা কিন্তু তার থেকে আরো অনেক পরে 2424 সনে কোন একটা সময় দেখা গেল যে একজন রাজা অসুস্থ তিনি জনগণের সামনে বক্তৃতা দিতে পারবেন না তখন একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ রাজার কথাকে নকল করে রাজ্যের জন্য ভিডিও প্রচার করলো। অপরদিকে সিরিয়ার শহর দখল না করে টিভিতে প্রচার করল যে সিরিয়া শহরের সেই রাজা আত্মসমর্পণ করেছে এই বিভ্রান্তিকর ভিডিওটা ছড়িয়ে পড়ল এবং সেই জনগণের মন ভেঙ্গে দিল।।
এই ধরনের কৌশল কিন্তু অনেক আগেই যুগ যুগ ধরে মানুষ করে আসছে কিন্তু তথ্য প্রযুক্তি বা ডিপফেক্ট ব্যবহার করে এখন এই কাজটি এবং এই বানোয়াট ভিডিওগুলো তৈরি করা সহজ হয়ে যাচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ফেক ভিডিও তৈরি করা যায় এবং এতে খরচ খুব কম হয়। যেকোনো কনটিন তৈরি করার ক্ষেত্রে সাধারণত life span বা কতদিন তা থাকবে সেটা চিন্তা ভাবনা করা হয় কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এখন আর কেউ দীর্ঘমেয়াদি বা অনেকদিন ধরে কন্টেন্টের গুরুত্ব থাকবে সেদিকে তেমন একটা নজর দেয় না বরং অল্প কিছুর জন্য তা পপুলার থাকবে সেই দিকেই সবার আগ্রহী।। এছাড়া আগে যেমন ইউনিক কনটেন্ট কিনা সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হতো কিন্তু এখন আর ইউনিক ভাবা হয় না পপুলার কোন টপিক পেলে সেই টপিক কিংবা ভিডিওর সাথে নিজের তথ্যকে সং সংযুক্ত করে দ্রুততার সাথে পপুলার হবার দিকে সবার নজর।।
সনাতন মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলো কন্টেন্টের ব্যাপারে বেশ সিনসিয়ার বা কমিটমেন্ট থাকে তার কারণ হলো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তার কিছু দায়বদ্ধতা থাকে।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে সেই ধরনের তার কোন দায়বদ্ধতা নেই যে কারণে যে কেউ যেকোনো ধরনের তথ্য সেখানে পোস্ট করতে পারে আর এই কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতে কন্টেন্ট গুলো খুব সস্তা ধরনের হয় এবং কোয়ালিটির দিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়া হয় না।।
সাধারণত মুখরাচর কনটেন্ট এই বেশি সোশ্যাল মিডিয়াতে। দেখা যায় এবং কনটেন্টের থেকেও
তারা বেশি সময় দেয় মুখরোচর কোন টাইটেল দেওয়ার জন্য। সেই টাইটেল পড়ে মানুষজনকে প্রলুব্ধ করে সেটি পড়ানোর জন্য।
তবে ফেক ভিডিও নিয়ে কিন্তু বিভিন্ন দেশের সরকার বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।। প্রধান শুরু বলা যায় যে ইউকে এর সংসদে তারা ঘোষণা করেছেন যে ফেক নিউজ বাবুয়া খবর যদি কেউ প্রচার করে তাহলে সেই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি যে প্লাটফর্মে এই খবরটি প্রচারিত হচ্ছে তারা মূলত এটার দায়ী থাকবে।। অর্থাৎ কোন লিগাল কেস হলে তাকে ধরা হবে।
এছাড়া ডিপফেকের আরেকটা ভয়াবহ ব্যবহার হলো face swapping বা পরিবর্তন করা। এর ফলে একজনের শুধুমাত্র ছবি থাকলেই হবে সেই ছবিটা দিয়ে তার পর্নোগ্রাফি কোন ভিডিও তৈরি করে ফেলা সম্ভব।। যেটা আমাদের জন্য একটা সামাজিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। মনে করা যাক আপনার ছোট বোনের ছবি ফেসবুকে রয়েছে সেই ছবিটি সংগ্রহ করে যৌনতার কোন ভিডিও তৈরি করে দেয়া সম্ভব।